বৈশাখী প্রিয় কবিতা উৎসব – মাহমুদুল হাসানের সাথে

কবিতা প্রেমের রাজধানী। এই প্রেম শুধুমাত্র কপোত-কপোতীর প্রেম না। কবিতা সবার আগে মানুষকে নিজের  প্রেমে মজতে শেখায়। কবিতা অসময়ে ছায়া দেয়, সুসময়ে ছায়া দিতে শেখায়। কবিতা মানুষের বুকের ভেতরের কথা বলে।

পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ উপলক্ষে আমরা জানতে চেয়েছিলাম আপনাদের প্রিয় কবিতাগুলো। মাত্র একদিনের নোটিশে এই আয়োজন আমরা করতে চেয়েছিলাম। ভয়, শঙ্কা দুটোই ছিলো। কিন্তু আপনাদের উৎফুল্ল অংশগ্রহণ আমাদের শুধু সাহস যোগায়নি, দিয়েছে অনুপ্রেরণাও। আপনাদের প্রিয় কবিতাগুলো নিয়ে আমাদের এই আয়োজন অব্যাহত থাকবে।

আজকে থাকছে মাহমুদুল হাসান-এর প্রিয় কবিতাগুলো নিয়ে আয়োজন। আশা করি তার প্রিয় কবিতাগুলো আপনাদেরও ছুঁয়ে যাবে।

পঁচিশ বছর পরে (মাঠের গল্প) – জীবনানন্দ দাশ

শেষবার তার সাথে যখন হয়েছে দেখা মাঠের উপরে-
বলিলামঃ ‘ একদিন এমন সময়
আবার আসিও তুমি- আসিবার ইচ্ছা যদি হয়;
পঁচিশ বছর পরে ।‘
এই ব’লে ফিরে আমি আসিলাম ঘরে;
তারপর, কতবার চাঁদ আর তারা,
মাঠে- মাঠে মরে গেল, ইঁদুর – পেঁচারা
জ্যোৎস্নায় ধানক্ষেত খুঁজে
এল-গেল ! – চোখ বুজে
কতবার ডানে আর বাঁয়ে
পড়িল ঘুমায়ে
কত- কেউ !- রহিলাম জেগে
আমি একা- নক্ষত্র যে বেগে
ছুটিছে আকাশ,
তার চেয়ে আগে চ’লে আসে
যদিও সময়,-
পঁচিশ বছর তবু কই শেষ হয় !-

তারপর- একদিন
আবার হলদে তৃণ
ভ’রে আছে মাঠে –
পাতায় , শুকনো ডাঁটে
ভাসিছে কুয়াশা
দিকে- দিকে, – চড়ুয়ের ভাঙা বাসা
শিশিরে গিয়েছে ভিজে, – পথের উপর
পাখির ডিমের খোলা , ঠাণ্ডা – কড়কড় !
শসাফুল , – দু-একটা নষ্ট শাদা শসা,-
মাকড়ের ছেঁড়া জাল, – শুকনো মাকড়সা
লতায়- পাতায়;-
ফুটফুটে জ্যোৎস্নারাতে পথ চেনা যায়;
দেখা যায় কয়েকটা তারা
হিম আকাশের গায়,- ইঁদুর – পেঁচারা
ঘুরে যায় মাঠে – মাঠে , ক্ষুদ খেয়ে ওদের পিপাসা আজো মেটে,
পঁচিশ বছর তবু গেছে কবে কেটে !

Poem divider

পাখি হয়ে যায় প্রাণ – আবুল হাসান

অবশেষে জেনেছি মানুষ একা!

জেনেছি মানুষ তার চিবুকের কাছেও ভীষণ অচেনা ও একা!
দৃশ্যের বিপরীত সে পারে না একাত্ম হতে এই পৃথিবীর সাথে কোনোদিন।

ফাতিমা ফুফুর প্রভাতকালীন কোরানের
মর্মায়িত গানের স্মরণে তাই কেন যেন আমি

চলে যাই আজও সেই বর্নির বাওড়ের বৈকালিক ভ্রমণের পথে,
যেখানে নদীর ভরা কান্না শোনা যেত মাঝে মাঝে
জনপদবালাদের স্ফুরিত সিনানের অন্তর্লীন শব্দে মেদুর!

মনে পড়ে সরজু দিদির কপালের লক্ষ্মী চাঁদ তারা
নরম যুঁইয়ের গন্ধ মেলার মতো চোখের মাথুর ভাষা আর
হরিকীর্তনের নদীভূত বোল!
বড় ভাই আসতেন মাঝরাতে মহকুমা শহরের যাত্রাগান শুনে,
সাইকেল বেজে উঠত ফেলে আসা শব্দে যখন,
নিদ্রার নেশায় উবু হয়ে শুনতাম, যেন শব্দে কান পেতে রেখে :
কেউ বলে যাচ্ছে যেন,
বাবলু তোমার নীল চোখের ভিতর এক সামুদ্রিক ঝড় কেন?
পিঠে অই সারসের মতো কী বেঁধে রেখেছ?

আসতেন পাখি শিকারের সূক্ষ্ম চোখ নিয়ে দুলাভাই!
ছোটবোন ঘরে বসে কেন যেন তখন কেমন
পানের পাতার মতো নমনীয় হতো ক্রমে ক্রমে!

আর অন্ধ লোকটাও সন্ধ্যায়, পাখিহীন দৃশ্য চোখে ভরে!
দিঘিতে ভাসত ঘনমেঘ, জল নিতে এসে
মেঘ হয়ে যেত লীলা বৌদি সেই গোধূলিবেলায়,
পাতা ঝরবার মতো শব্দ হতো জলে, ভাবতুম
এমন দিনে কি ওরে বলা যায়—?

স্মরণপ্রদেশ থেকে এক একটি নিবাস উঠে গেছে
সরজু দিদিরা ঐ বাংলায়, বড়ভাই নিরুদ্দিষ্ট,
সাইকেলের ঘণ্টাধ্বনি সাথে করে নিয়ে গেছে গাঁয়ের হালট!

একে একে নদীর ধারার মতো তারা বহুদূরে গত!
বদলপ্রয়াসী এই জীবনের জোয়ারে কেবল অন্তঃশীল একটি দ্বীপের মতো

সবার গোচরহীন আছি আজও সুদূরসন্ধানী!

দূরে বসে প্রবাহের অন্তর্গত আমি, তাই নিজেরই অচেনা নিজে
কেবল দিব্যতাদুষ্ট শোনিতের ভারা ভারা স্বপ্ন বোঝাই মাঠে দেখি,
সেখানেও বসে আছে বৃক্ষের মতন একা একজন লোক,
যাকে ঘিরে বিশজন দেবদূত গাইছে কেবলি
শতজীবনের শত কুহেলি ও কুয়াশার গান!

পাখি হয়ে যায় এ প্রাণ ঐ কুহেলি মাঠের প্রান্তরে হে দেবদূত!

Poem divider

জন্মমৃত্যু জীবনযাপন – আবুল হাসান

মৃত্যু আমাকে নেবে, জাতিসংঘ আমাকে নেবে না,

আমি তাই নিরপেক্ষ মানুষের কাছে, কবিদের সুধী সমাবেশে
আমার মৃত্যুর আগে বোলে যেতে চাই,
সুধীবৃন্দ ক্ষান্ত হোন, গোলাপ ফুলের মতো শান্ত হোন
কী লাভ যুদ্ধ কোরে? শত্রুতায় কী লাভ বলুন?
আধিপত্যে এত লোভ? পত্রিকা তো কেবলি আপনাদের
ক্ষয়ক্ষতি, ধ্বংস আর বিনাশের সংবাদে ভরপুর…

মানুষ চাঁদে গেল, আমি ভালোবাসা পেলুম
পৃথিবীতে তবু হানাহানি থামলো না!

পৃথিবীতে তবু আমার মতোন কেউ রাত জেগে
নুলো ভিখিরীর গান, দারিদ্রের এত অভিমান দেখলো না!

আমাদের জীবনের অর্ধেক সময় তো আমরা
সঙ্গমে আর সন্তান উৎপাদনে শেষ কোরে দিলাম,
সুধীবৃন্দ, তবু জীবনে কয়বার বলুন তো
আমরা আমাদের কাছে বোলতে পেরেছি,

ভালো আছি, খুব ভালো আছি?

Poem divider

নিমন্ত্রণ – জসীম উদ্‌দীন

তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়;
মায়া মমতায় জড়াজড়ি করি
মোর গেহখানি রহিয়াছে ভরি,
মায়ের বুকেতে, বোনের আদরে, ভাইয়ের স্নেহের ছায়,
তুমি যাবে ভাই – যাবে মোর সাথে, আমাদের ছোট গাঁয়,

ছোট গাঁওখানি- ছোট নদী চলে, তারি একপাশ দিয়া,
কালো জল তার মাজিয়াছে কেবা কাকের চক্ষু নিয়া;
ঘাটের কিনারে আছে বাঁধা তরী
পারের খবর টানাটানি করি;
বিনাসুতি মালা গাথিছে নিতুই এপার ওপার দিয়া;
বাঁকা ফাঁদ পেতে টানিয়া আনিছে দুইটি তটের হিয়া।

তুমি যাবে ভাই- যাবে মোর সাথে, ছোট সে কাজল গাঁয়,
গলাগলি ধরি কলা বন; যেন ঘিরিয়া রয়েছে তায়।
সরু পথ খানি সুতায় বাঁধিয়া
দূর পথিকেরে আনিছে টানিয়া,
বনের হাওয়ায়, গাছের ছায়ায়, ধরিয়া রাখিবে তায়,
বুকখানি তার ভরে দেবে বুঝি, মায়া আর মমতায়!

তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে – নরম ঘাসের পাতে
চম্বন রাখি অধরখানিতে মেজে লয়ো নিরালাতে।
তেলাকুচা – লতা গলায় পরিয়া
মেঠো ফুলে নিও আঁচল ভরিয়া,
হেথায় সেথায় ভাব করো তুমি বুনো পাখিদের সাথে,
তোমার গায়ের রংখানি তুমি দেখিবে তাদের পাতে।

তুমি যদি যাও আমাদের গাঁয়ে, তোমারে সঙ্গে করি
নদীর ওপারে চলে যাই তবে লইয়া ঘাটের তরী।
মাঠের যত না রাখাল ডাকিয়া
তোর সনে দেই মিতালী করিয়া
ঢেলা কুড়িইয়া গড়ি ইমারত সারা দিনমান ধরি,
সত্যিকারের নগর ভুলিয়া নকল নগর গড়ি।

তুমি যদি যাও – দেখিবে সেখানে মটর লতার সনে,
সীম আর সীম – হাত বাড়াইলে মুঠি ভরে সেই খানে।
তুমি যদি যাও সে – সব কুড়ায়ে
নাড়ার আগুনে পোড়ায়ে পোড়ায়ে,
খাব আর যত গেঁয়ো – চাষীদের ডাকিয়া নিমন্ত্রণে,
হাসিয়া হাসিয়া মুঠি মুঠি তাহা বিলাইব দুইজনে।

তুমি যদি যাও – শালুক কুড়ায়ে, খুব – খুব বড় করে,
এমন একটি গাঁথিব মালা যা দেখনি কাহারো করে,
কারেও দেব না, তুমি যদি চাও
আচ্ছা না হয় দিয়ে দেব তাও,
মালাটিরে তুমি রাখিও কিন্তু শক্ত করিয়া ধরে,
ও পাড়ার সব দুষ্ট ছেলেরা নিতে পারে জোর করে;

সন্ধ্যা হইলে ঘরে ফিরে যাব, মা যদি বকিতে চায়,
মতলব কিছু আঁটিব যাহাতে খুশী তারে করা যায়!
লাল আলোয়ানে ঘুঁটে কুড়াইয়া
বেঁধে নিয়ে যাব মাথায় করিয়া
এত ঘুষ পেয়ে যদি বা তাহার মন না উঠিতে চায়,
বলিব – কালিকে মটরের শাক এনে দেব বহু তায়।

খুব ভোর ক’রে উঠিতে হইবে, সূয্যি উঠারও আগে,
কারেও ক’বি না, দেখিস্ পায়ের শব্দে কেহ না জাগে
রেল সড়কের ছোট খাদ ভরে
ডানকিনে মাছ কিলবিল করে;
কাদার বাঁধন গাঁথি মাঝামাঝি জল সেঁচে আগে ভাগে
সব মাছগুলো কুড়ায়ে আনিব কাহারো জানার আগে।

ভর দুপুরেতে এক রাশ কাঁদা আর এক রাশ মাছ,
কাপড়ে জড়ায়ে ফিরিয়া আসিব আপন বাড়ির কাছ।
ওরে মুখ – পোড়া ওরে বাঁদর।
গালি – ভরা মার অমনি আদর,
কতদিন আমি শুনি নারে ভাই আমার মায়ের পাছ;
যাবি তুই ভাই, আমাদের গাঁয়ে যেথা ঘন কালো গাছ।

যাবি তুই ভাই, যাবি মোর সাথে আমাদের ছোট গাঁয়।
ঘন কালো বন – মায়া মমতায় বেঁধেছে বনের বায়।
গাছের ছায়ায় বনের লতায়
মোর শিশুকাল লুকায়েছে হায়!
আজি সে – সব সরায়ে সরায়ে খুজিয়া লইব তায়,
যাবি তুই ভাই, যাবি মোর সাথে আমাদের ছোট গায়।

তোরে নিয়ে যাব আমাদের গাঁয়ে ঘন-পল্লব তলে
লুকায়ে থাকিস, খুজে যেন কেহ পায় না কোনই বলে।
মেঠো কোন ফুল কুড়াইতে যেয়ে,
হারাইয়া যাস পথ নাহি পেয়ে;
অলস দেহটি মাটিতে বিছায়ে ঘুমাস সন্ধ্যা হলে,
সারা গাঁও আমি খুজিয়া ফিরিব তোরি নাম বলে বলে।

Poem divider

প্রস্থান – হেলাল হাফিজ

এখন তুমি কোথায় আছো কেমন আছো, পত্র দিয়ো৷
এক বিকেলে মেলায় কেনা খামখেয়ালী তাল পাখাটা
খুব নিশীথে তোমার হাতে কেমন আছে, পত্র দিয়ো৷
ক্যালেন্ডারের কোন পাতাটা আমার মতো খুব ব্যথিত
ডাগর চোখে তাকিয়ে থাকে তোমার দিকে, পত্র দিয়ো৷
কোন কথাটা অষ্টপ্রহর কেবল বাজে মনের কানে
কোন স্মৃতিটা উস্কানি দেয় ভাসতে বলে প্রেমের বানে
পত্র দিয়ো, পত্র দিয়ো৷
আর না হলে যত্ন করে ভুলেই যেয়ো, আপত্তি নেই৷
গিয়ে থাকলে আমার গেছে, কার কী তাতে?
আমি না হয় ভালোবেসেই ভুল করেছি ভুল করেছি,
নষ্ট ফুলের পরাগ মেখে
পাঁচ দুপুরের নির্জনতা খুন করেছি, কী আসে যায়?
এক জীবনে কতোটা আর নষ্ট হবে,
এক মানবী কতোটা আর কষ্ট দেবে!

Poem divider

যাতায়াত – হেলাল হাফিজ

কেউ জানে না আমার কেন এমন হলো।

কেন আমার দিন কাটে না রাত কাটে না
রাত কাটে তো ভোর দেখি না
কেন আমার হাতের মাঝে হাত থাকে না কেউ জানেনা।

নষ্ট রাখীর কষ্ট নিয়ে অতোটা পথ একলা এলাম
পেছন থেকে কেউ বলেনি করুণ পথিক
দুপুর রোদে গাছের নিচে একটু বসে জিরিয়ে নিও,
কেউ বলেনি ভালো থেকো সুখেই থেকো
যুগল চোখে জলের ভাষায় আসার সময় কেউ বলেনি
মাথার কসম আবার এসো

জন্মাবধি ভেতরে এক রঙিন পাখি কেঁদেই গেলো
শুনলো না কেউ ধ্রুপদী ডাক,
চৈত্রাগুনে জ্বলে গেলো আমার বুকের গেরস্থালি
বললো না কেউ তরুন তাপস এই নে চারু শীতল কলস।

লন্ডভন্ড হয়ে গেলাম তবু এলাম।

ক্যাঙ্গারু তার শাবক নিয়ে যেমন করে বিপদ পেরোয়
আমিও ঠিক তেমনি করে সভ্যতা আর শুভ্রতাকে বুকে নিয়েই দুঃসময়ে এতোটা পথ একলা এলাম শুশ্রূষাহীন।

কেউ ডাকেনি তবু এলাম, বলতে এলাম ভালোবাসি।

Poem divider

কোন এক নারীর জন্য – রফিক আজাদ

চৈত্রের এক মধ্যরাতে
বুকের কপাট খুলে দু’বাহু বাড়িয়ে
আমি অপেক্ষা করছিলাম
কোনো এক নারীর জন্যে…
কৃষিজমিতে দাঁড়িয়ে
যে রকম অপেক্ষা করে উন্মুখ কৃষক
ফসল-ফলানো বৃষ্টির জন্যে—

আমি অপেক্ষা করছিলাম
একজন নারীর জন্যে, সম্পূর্ণ রমণী—
যার স্পর্শে এই পাথর সোনা হয়ে উঠবে
ব্রোঞ্জ, তামা আর দস্তার সমারোহময় এই দেশে;

আমি অপেক্ষা করছিলাম
চৈত্রের নির্জন মধ্যরাতে
দু’হাত পাখির মতো মেলে ধরে
হৃদয়ে মধ্যযুগ-উৎসারিত সমস্ত আবেগ সঞ্চারিত করে
নিছক এক নারীর আকাঙ্ক্ষায়…

কী এক অচেনা আবেগের ভরে
আমি অপেক্ষা করছিলাম
মেঘহীন গুমোট গরমে
খরাপীড়িত বাংলায়
চৈত্রের কোনো এক মধ্যরাতে
দু’বাহু মেলে ধরে, বুকে টনটনে ব্যথা নিয়ে
এক পরিপূর্ণ নারীর জন্যে—

যে নারী আমার ছোট এক কামরার
গুহাতুল্য বায়ুচলাচলহীন ম্রিয়মাণ ঘরে
শতাব্দীর সুবাতাস বয়ে চলে আসবে অকাতরে;
তার গৃহপ্রবেশের সঙ্গে-সঙ্গে হঠাৎ আলোর
ঝলকানি লেগে ঝলমল করে উঠবে
ঘরময় সকল আসবাব, যার প্রতি পদপাতে
সুরভিত রক্তপদ্ম ফুটে উঠবে, আমার বিছানার
প্রান্তে বসার সঙ্গে-সঙ্গে তার নিতম্বের নিচে
একরাশ রজনীগন্ধা হেসে উঠবে—
দীর্ঘদিন অবহেলা ও অযত্নে পড়ে থাকা
আমার ক’টি তুচ্ছ কবিতার বই
সে স্পর্শ করামাত্র প্রতিটি পৃষ্ঠা থেকে
বসরাই গোলাপের গন্ধ বেরুতে থাকবে!
অবশেষে, এই চুম্বনরহিত ঠোঁটে
সে তার ঠোঁট মেলাতেই সৌগন্ধ্যমণ্ডিত
আমার ওষ্ঠ থেকে অবিরল ধারায়
নিঃসরিত হতে থাকবে গালিবের গজলের মতো
কালজয়ী অনিঃশেষ পংক্তিসমূহ…

Poem divider

প্রিয় কবিতার এই পাঠককে অনেক ধন্যবাদ আমাদের সাথে এত দারুণ সব কবিতা শেয়ার করার জন্য। আশা করি তার পাঠক জীবনে তিনি আরো দারুণ সব কবিতা পড়ার সৌভাগ্য পাবেন। তার জন্য শুভকামনা।

আপনিও যদি নিজের প্রিয় কবিতাটি আমাদের সাথে ভাগ করে নিতে চান, পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে। আমরা সেটা ভাগ করে নেব আরো অসংখ্য পাঠকের সাথে।

আমাদের অন্যান্য আয়োজনের সঙ্গী হতে চোখ রাখুন আমাদের ফেসবুক পেইজে, নিয়মিত ভিজিট করুন লণ্ঠনে। যোগ দিন শিল্পের এক নতুন উৎসবে।

ছড়িয়ে দিন ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *